Bobita Rajput [অনুপ্রেরণা]EP 13

Share:

Listens: 0

Filmifootage

Arts


গল্পটা মধ্যভারতের। গল্পটা জল না পাওয়া, এক অসহায় গ্রামের। মধ্যপ্রদেশের আগ্রোতা গ্রাম। ২০২০ সালে বৃষ্টি হয়েছিল দুবার। হ্যাঁ, ঠিক শুনছেন। দুবার। আবহাওয়া, বৃষ্টির অপ্রতুলতা এতটাই অসহায়তা তৈরি করে এই অংশের মানুষকে। একসময় করতও। এখন করে না। ববিতা আছে যে। কে ববিতা? উনিশ বছরের তরুণী ববিতা রাজপুত এবং এক স্বপ্ন ছোঁয়ার গল্প। শুষ্ক, বৃষ্টিবিহীন আগ্রোতা গ্রামের সেই তরুণী আর পাঁচটা মেয়ের মতোই অসহায়। অথচ চোখ, মন সুদূরপ্রসারী। ৭০ একরের একটা জলাশয় আছে, যা গরমের সময় শুকিয়ে কাঠ। ৭০ একরের ওই জলাশয়ের মাত্র ৪ একর এলাকা জল পেত বৃষ্টির অপ্রতুলতার জন্য। ওই ৪ একরভাগ করতে হত বুন্দেলখণ্ডের এই গ্রামের প্রায় ১৪০০ পরিবারকে। এমনিতেই বৃষ্টি নেই, যেটুকু যা হয়, পাহাড়ের এক প্রান্ত থেকে এসে ধুয়ে শেষমেশ মিশে যায় একটু দূরে বাচেরি নদীতে। সেই নষ্ট হয়ে যাওয়া দুর্মূল্য জলকে সুকৌশলে ব্যবহার করার কথা ভাবে ববিতা। ববিতা তখন উনিশ। কলা বিভাগে মাস্টার ডিগ্রি। ববিতার চোখে অন্য স্বদেশ। দীর্ঘ পরিকল্পনায় এগিয়েছিল সে। পাহাড়ের একটা বিশাল অংশ বন বিভাগের আওতায় ছিল। তাঁদের থেকে অনুমতি নিয়ে ১০৭ মিটার দীর্ঘ ট্রেঞ্চ তৈরি করল সে। নিজে হাত লাগাল। সঙ্গে এলেন আরও ২০০ জন মহিলা। সাত সাতটা মাস। ববিতারা আশা ছাড়েনি। অসম্ভব গরমের মধ্যেও শ্রম। করতে যে হবেই। কারণ তার পরেই দেখা যাবে আলো। দেখা যাবে জল। তার মানেই বেঁচে থাকা। জীবন। হাজারটা চ্যালেঞ্জ ছিল। আইন টাইন দেখিয়ে গ্রামপঞ্চায়েত মানতে চায়নি প্রথমে। বনদপ্তরের জমিতে ট্রেঞ্চ কাটার অনুমতি চাওয়াও কষ্টসাধ্য ছিল। বোঝাতে কালঘাম ছোটাতে হয়েছিল ববিতাদের। এছাড়াও ছিল আরও নানান বিরোধ। শেষমেশ এল ২০১৮-র মাঝামাঝি সময়। এনজিও পরমার্থ সমাজসেবী সংস্থা ফারিস্তা হয়ে এল। গ্রাম পরিদর্শনের সময় তারাও অবস্থাটা বুঝল। শুরুতে বারোজন গ্রামীণ মহিলার এক দল তৈরি হল। নাম হল পানি পঞ্চায়েত। তারা নিজেদের বলত ‘জল সহেলি’। প্রথমে তিনটি ছোট ছোট চেক ড্যাম তৈরি করে পাহাড় থেকে জল ধরে রাখার কাজ শুরু হল। কাজে দিল এই প্রচেষ্টা। জলস্তর ১ কিলোমিটার উপরে উঠে আসায় বর্ষা পরবর্তী মরশুমে অনেকটাই কাজে এল কৃষকদের। এই এনজিও এবং ববিতাদের পানি পঞ্চায়েত অবশেষে বনবিভাগকে বোঝাতে সমর্থ হল। ২০১৭ সালে বনদপ্তরের অনুমতি পাওয়া গেল। কাজ শুরু হল ২০১৮-য়। শুরুতে ছিলেন ২০ জন মহিলা। অবশ্য একসময় সংখ্যাটা বাড়তে থাকে। তৈরি হল ১২ ফুট চওড়া ১০৭ ফুট দীর্ঘ ট্রেঞ্চ। তীব্র গরমের ভেতরেই কাজ করা। কারণ, বৃষ্টির আগেই কাজ শেষ করা চাই, যাতে বৃষ্টির জল জমা হতে পারে ট্রেঞ্চে। জলাশয়ের ৪ থেকে বেড়ে ক্রমশ ৪০ একর জমি জল ধরে রাখতে সমর্থ হল। মহিলারা সাধ্যমত ক্ষমতা দিয়ে যেটুকু পেলেন, তা তাঁদের প্রয়োজন মিটিয়ে দিল সন্দেহ নেই। কিছু বাড়তি পাওনাও হয়ে গেল। ভৌম জল ধরে রাখার ফলে মাটি আর্দ্র হয়ে যাওয়ায় সর্ষে, মটর ইত্যাদি ফসলের উৎপাদন ব্যাপক বেড়ে গেল। সাহায্য পেল আশেপাশে ছটি গ্রাম। ববিতার কাজ শুরু হয়েছে সবে। তার নেতৃত্বে মহিলারা সারি সারি গাছ পুঁতছেন শুষ্ক আগ্রোতা গ্রামে। জৈব চাষে উৎসাহিত হচ্ছেন তাঁরা। করছেন কিচেন গার্ডেন। ছোট ছোট আশা, আলো এভাবেই কোলাজ তৈরি করুক এক বৃহত্তর ভারতবর্ষের। জল, আলো, জীবন নির্মিত হোক… --- This episode is sponsored by · Anchor: The easiest way to make a podcast. https://anchor.fm/app --- Send in a voice message: https://anchor.fm/filmi-footage/message